মাটির কুমিরকে কুপিয়ে হত্যা করাই রীতি, নয়ত জীবন্ত কুমির হয়ে কামড়ে দিতে পারে। সেই বিশ্বাস থেকেই যুগ যুগ ধরে পালিত হয়ে আসছে যে পূজা, তা লোকমুখে কুমির পূজা নামে পরিচিত পেয়েছে।

তবে এ পূজার নাম বাস্ত পূজা। পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায় প্রতি বছর এ উৎসব পালন করে আসছে।

শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) দিনব্যাপী ঝালকাঠি জেলা শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় নানা আয়োজনে লোকজ সংস্কৃতির এ কুমির পূজা অনুষ্ঠিত হয়।

বাস্ত পূজা শেষে ঝালকাঠি লোকনাথ মন্দিরের পুরহিত অমল ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘বর্তমানে কুমির পূজা নামে পরিচিত হলেও মূলত পূজার নাম বাস্ত পূজা। হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে যাদের বাস্তভিটা কিংবা স্থাপনা রয়েছে তারাই বছরের বাংলা পৌষ মাসের শেষ দিন এ পূজার আয়োজন করে আসছেন যুগযুগ ধরে। জনপদে বাস্তভিটা রক্ষায় বাস্ত দেবীকে সন্তুষ্ট করতেই আয়োজন করা হয় নানা আচার। আর বাহন কুমিরের পিঠে চড়ে পূজিত হন দেবি বাস্ত।’

কথিত রয়েছে, পূজা শেষে দেবীর বাহন কুমিরটিকে কুপিয়ে প্রতিকীভাবে হত্যা করতে হবে, নয়তো মাটির কুমির জীবন্ত হয়ে কামড়ে দিতে পারে মানুষজনকে। বিশেষ করে শিশুদের।

পুরোহিত অমল ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘মূলত অমঙ্গল বা অশুভকে তাড়াতেই প্রতিকীভাবে কুমিরকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। জনপদের বাসিন্দাদের বাস্তভিটা রক্ষায় বিশেষ এ ধর্মীয় আচার আনুষ্ঠান তাই কুমির পূজা নামে পরিচিতি পেয়েছে।’

শুক্রবার জেলা শহরের লোকনাথ মন্দির, জেলে পাড়া, বাঁশপট্টি, কাঁশারীপট্টিসহ শহর ও গ্রামাঞ্চলর বিভিন্ন এলাকায় বাস্ত পূজা অনুষ্ঠিত হয়। তবে করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় সবখানেই আয়োজন সীমিত করা হয়। পূজা শেষে প্রসাদ বিতরণেরও আয়োজন করা হয়।

বি/ সুলতানা